কৃষিঋণ বিতরণ ও আদায় বেড়েছে

রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও চলতি অর্থবছরের (২০১৩-১৪) প্রথম ৫ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) কৃষিঋণ বিতরণ ও আদায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। এ সময়ে ৫ হাজার ৫০১ কোটি টাকার কৃষিঋণ বিতরণ করা হয়েছে, যা গত ২০১২-১৩ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৯৩৯ কোটি টাকা বা ২০ দশমিক ৬০ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষিঋণ সংক্রান্ত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বিগত ২০১২-১৩ অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে কৃষি খাতে বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ৫৬১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। চলতি অর্থবছরে ১৪ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। সে হিসাবে প্রথম ৫ মাসে লক্ষ্যমাত্রার ৩৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ ঋণ বিতরণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষিঋণ ও আর্থিক সেবাভুক্তি বিভাগের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এ সময়ে কৃষিঋণ আদায় হয়েছে ৬ হাজার ৯৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা, যা মোট লক্ষ্যমাত্রার ৪৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ। গত ২০১২-১৩ অর্থবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৫ হাজার ১২৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে আলোচ্য সময়ে ঋণ আদায় বেড়েছে প্রায় ১৯ শতাংশ।
এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কৃষিঋণ ও আর্থিক সেবাভুক্তি বিভাগের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, আমন মৌসুমের পর এখন বোরো আবাদ শুরু হওয়ায় মাঠপর্যায়ে ঋণের চাহিদা বেড়েছে। এর পাশাপাশি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মতো বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোও কৃষিঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে আগ্রহ দেখাচ্ছে। মূলত এসব কারণেই লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ঋণ বিতরণ হচ্ছে। এর পাশাপাশি ব্যাংকগুলো ঋণ আদায়ের ওপর গুরুত্ব দেয়ায় এক্ষেত্রেও সফলতা আসছে।
কৃষিঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর নির্দেশনা ও নজরদারিত্বের সুফল পাওয়া যাচ্ছে বলে তিনি জানান। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকলে এই ঋণ প্রবাহ আরো বাড়ত বলে তিনি মনে করেন। আলোচ্য সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকের পাশাপাশি বেসরকারি ব্যাংকগুলো পর্যাপ্ত পরিমাণ ঋণ বিতরণ করলেও বরাবরের মতো বিদেশি ব্যাংকগুলো এক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে।
এ সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংক মিলে ৩ হাজার ৫ কোটি ৫৬ লাখ এবং দেশি ও বিদেশি বেসরকারি ব্যাংকগুলো ১ হাজার ৯৯৫ কোটি ৩৯ লাখ টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। বিগত বছরের ন্যায় চলতি অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে সবচেয়ে বেশি ২ হাজার ২ কোটি ২১ লাখ টাকা ঋণ বিতরণ করেছে বিশেষায়িত খাতের বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক। এরপর রয়েছে রাজশাহী উন্নয়ন ব্যাংক ৪৬৫ কোটি ২৩ লাখ এবং সোনালী ব্যাংক ২৪৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।
সূত্র: দৈনিক যায় যায় দিন, ২২ ডিসেম্বর ২০১৩

,

0 comments

আপনার মন্তব্য লিখুন