চলছে বাণিজ্যমেলার প্রস্তুতি

টানা রাজনৈতিক সহিংসতার মধ্য দিয়েও রাজধানীতে চলছে ১৯তম আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা আয়োজনের কার্যক্রম। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আসন্ন বাণিজ্যমেলা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও আয়োজক কমিটির সব প্রস্তুতি শেষের দিকে। ইতোমধ্যে মেলা প্রাঙ্গণে প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন, প্যাভিলিয়ন ও স্টল সাজানোর কাজ এগিয়ে চলছে। শনিবার মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে এমনটাই দেখা গেছে।
সূত্র মতে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) আয়োজনে প্রতিবছর জানুয়ারি মাসজুড়ে শেরেবাংলা নগরে একই স্থানে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এবারের বাণিজ্য মেলায় যেসব প্রতিষ্ঠানের কাজ উদ্বোধনের আগেই শেষ হবে, তাদের মধ্যে এগিয়ে রয়েছে ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিকস ও অটোমোবাইলস প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন সাজানোর কাজ। এ ছাড়াও এগিয়ে রয়েছে ফার্নিচার, ফ্রেবিক্স, টেক্সটাইলসহ বেশকিছু প্রতিষ্ঠান।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ইপিবি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দরপত্রের মাধ্যমে স্পেশাল প্যাভিলিয়ন, প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন, প্রিমিয়ার মিনি প্যাভিলিয়ন, প্রিমিয়ার স্টল ও রেস্তোরাঁ বরাদ্দ দেয়ার কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। দর্শকদের সুবিধা ও সৌন্দর্যের বিবেচনায় এবার আয়োজনে কিছু নতুনত্ব আনার কথাও জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সৌন্দর্যবর্ধনে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ইতিহাসে এবারই প্রথম প্যাভিলিয়নে লিফট স্থাপন করা হচ্ছে। বাণিজ্যমেলায় বরাবরই অপূর্ব স্থাপত্যশৈলীতে প্যাভিলিয়ন নির্মাণ করা হয়ে থাকে।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর এক কর্মকর্তা বলেন, মূলত ব্যবসায়ীরা মেলায় অংশ নিয়ে কিছু ব্যবসা-বাণিজ্য করে। কিন্তু যেভাবে হরতাল, অবরোধ ও রাজনৈতিক সহিংসতা শুরু হয়েছে তাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে। এ পরিস্থিতির উন্নতি না হলে মেলাতে লোকসমাগম কম হওয়ার ঝুঁকি থাকবে।
এ বছর বিদেশি কয়েকটি দেশ অংশ নিয়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কম। অংশ নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ভারত, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, তুরস্ক, ইউএসএ, চীন, জাপান ও হংকংসহ ১২টি দেশের ২০টি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু গত বছরে ১২টি দেশের ৩১টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছিল। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এ বছর বিদেশি প্রতিষ্ঠানের অংশ নেয়া কমেছে। এর আগের বছর বাণিজ্যমেলায় ১২টি দেশের ৪৭টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছিল।
গত বছরে মেলায় ১৫৮ কোটি টাকার রপ্তানির অর্ডার পাওয়া গেছে। কিন্তু এ বছর ওই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে কিনা এ বিষয় নিয়ে চিন্তিত সংশ্লিষ্টরা।
এ বছর মেলার টিকিট ইজারা দেয়া হয়েছে ৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকায়। প্রধান ফটক দেয়া হয়েছে ১০ লাখ টাকায়। প্রায় ১৮ থেকে ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে মেলার মাঠের অবকাঠামোসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক ব্যয় মেটানো হয়েছে।
এবারের বাণিজ্যমেলায় রেস্তোরাঁসহ স্টল ও প্যাভিলিয়নের সংখ্যা রাখা হয়েছে ৪৬৯টি। এর মধ্যে রয়েছে প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন ৫৪টি, প্রিমিয়ার মিনি প্যাভিলিয়ন ৪৪টি, রিজার্ভ মিনি প্যাভিলিয়ন পাঁচটি, জেনারেল প্যাভিলিয়ন ১৩টি, ফরেন প্রিমিয়ার স্টল ১৯টি, রেস্টুরেন্ট ১০টি, ফুড স্টল ৪২টি, ইপিবি তথ্যকেন্দ্র একটি, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ও রক্তদান কেন্দ্র একটি, নামাজের স্থান, গাড়ি পার্কিং, ফায়ার সার্ভিসসহ এটিএম বুথ থাকবে চারটি। এ ছাড়া মেলায় ই-পার্ক একটি ও ই-শোপ থাকবে। মেলায় প্রবেশের জন্য গেট থাকবে চারটি।
অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদারের উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সূত্র: দৈনিক যায় যায় দিন, ২২ ডিসেম্বর ২০১৩

,

0 comments

আপনার মন্তব্য লিখুন