এলসিতে ভাটা

দেশের অনিশ্চিত গন্তব্যে বেঁকে বসেছে অর্থনীতির সূচকগুলো। একের পর এক বেরিয়ে আসছে এসব সূচকের নেতিবাচক খবর। ব্যাংকার, ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা প্রত্যেকের অবস্থান থেকে বহুবার জানিয়েছে- সার্বিক অর্থনীতির হালচাল। নিয়েছে বেশকিছু উদ্যোগ। কিন্তু কোন কাজে আসেনি এসব উদ্যোগ। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফরেন এক্সচেঞ্জ অপারেশন বিভাগের সর্বশেষ প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ঋণপত্র (এলসি) খোলা ও নিষ্পত্তির হার আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। তবে আগের মাস সেপ্টেম্বরের তুলনায় অক্টোবরে তা অনেক কমে গেছে। একক মাস হিসেবে গত অক্টোবরে ২৭৯ কোটি ৩৪ লাখ ডলারের পণ্য আমদানিতে ঋণপত্র খোলা হয়েছে, যা এর আগের মাসে ছিল ৩১৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার। সে হিসাবে অক্টোবরে এলসি খোলা ১১.২৩% কমেছে। এদিকে এ মাসে ২৮৪ কোটি ডলারের এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে, যা এর আগের মাসে হয়েছিল ৩০৯ কোটি ২৮ লাখ ডলার। সে হিসাবে অক্টোবরে এলসি নিষ্পত্তি কমেছে ৮.১৭%। এ বিষয়ে জানতে চাইলে রপ্তানিবিষয়ক সংগঠন এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) প্রেসিডেন্ট আবদুস সালাম মুর্শেদী মানবজমিনকে বলেন, দুই ধরনের ঋণপত্র (এলসি) খোলা হয়। একটি হচ্ছে- নিত্যপণ্য। যেমন চাল, ডাল, পিয়াজ, আলু ইত্যাদি। অন্যটি হচ্ছে- ইন্ডাস্ট্রির র মেটেরিয়াল আমদানি। দু’টো ক্ষেত্রেই চলছে স্থবিরতা। রাজনৈতিক অস্থিরতায় এসব হচ্ছে বলে মনে করেন সাবেক এ বিজিএমইএ প্রেসিডেন্ট। প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে মোট ১,২৪০ কোটি ডলার সমপরিমাণ পণ্যের এলসি খোলা হয়েছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে খোলা হয়েছিল ১,১৫৩ কোটি ডলার। এ হিসাবে একই সময়ের তুলনায় ঋণপত্র বেশি খোলা হয়েছে ৮৭ কোটি ডলার, যা ৭.৫৪%। অক্টোবরে চাল আমদানির জন্য দুই কোটি ডলারের ঋণপত্র খোলা হয়েছে। গমের জন্য প্রায় ৪ কোটি ডলার। বিভিন্ন পণ্যের এলসি খোলা হয়েছে ৪৯ কোটি ডলার। ১২ কোটি ডলারের মূলধনী যন্ত্রপাতির এলসি খোলা হয়েছে। অন্য যন্ত্রপাতির জন্য খোলা হয়েছে ৭ কোটি ডলার। এভাবে সব পণ্য মিলে ২৭৯ কোটি ডলারের এলসি খোলা হয়েছে। এর আগে ২০১২-১৩ অর্থবছরে এসে আমদানি কমেছে ৪.৩৬%। এর আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০১১-১২ অর্থবছর শেষে আমদানি বেশি হয়েছিল ৫.৫২%। এর আগের অর্থবছর এক্ষেত্রে ৪২% প্রবৃদ্ধি ছিল। বেশ কিছুদিন ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলতে থাকায় নতুন বিনিয়োগ কম হচ্ছে। এছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যুৎ-গ্যাস সংযোগ না পাওয়ায় মেশিনারিজ আমদানি উল্লেখযোগ্য হারে কমায় গত অর্থবছর জুড়েই আমদানিতে নেতিবাচক প্রবাহ ছিল। 
সূত্র: দৈনিক মানবজমিন, ২১ নভেম্বর ২০১৩

,

0 comments

আপনার মন্তব্য লিখুন