মানি লন্ডারিং বিধিমালার আওতায় এলো এনজিও প্রতিষ্ঠান

মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে বেসরকারি অলাভজনক সংস্থাগুলোর পরিপালনের জন্য ৯ বিষয়ে বিধিমালা জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ বিধিমালাটি প্রকাশ করে।  এর আগে এক প্রজ্ঞাপনে এনজিও ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলোকে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ এবং সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ আইনের রিপোটিং এজেন্সি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) ওই প্রজ্ঞাপনে প্রতিটি এনজিওকে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ বিষয়ক নীতিমালা প্রণয়ন করার নির্দেশনা দেয়া হয়। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এবং সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ আইন ২০০৯ এর বিধিবিধান সঠিকভাবে পরিপালন করে চলতে এনজিওগুলোর জন্য আরও কিছু করণীয় বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- প্রণীত নীতিমালা পরিপালনের জন্য একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়ে প্রধান কার্যালয়ে পরিপালন ইউনিট গঠন করতে হবে। মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়নের ঝুঁকি নির্ধারণ করে সে অনুযায়ী প্রতিরোধ বিষয়ে কর্মসূচি নিতে হবে। বড় গ্রাহক বা সুবিধাভোগীদের পূর্ণ পরিচিতি ও অর্থনৈতিক লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে পাঁচ বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে হবে। এনজিওকে তার পরিচালক বা উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে হবে। দাতা এনজিওকে তার সহযোগী এনজিও সম্পর্কিত পূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। দেশী এনজিওর বিদেশে কার্যক্রমের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ব্যাংকের মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন সম্পাদন করতে হবে। নীতিমালা বিষয়ে ন্যূনতম প্রতি তিন মাসে একটি সভা আয়োজন করতে হবে এবং কর্মকর্তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক নিষিদ্ধ ব্যক্তি বা সংগঠনের কাছ থেকে কোন তহবিল নেয়া যাবে না। এনজিওগুলোকে গ্রাহকদের মানিলন্ডারিং বা সন্ত্রাসে অর্থায়ন বিষয়ক সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পাওয়ামাত্র তা বিএফআইউ মহাব্যবস্থাপক বরাবরে পাঠাতে হবে। এছাড়া কোন এনজিওএর সন্দেহজনক লেনদেন প্রকাশিত হলে যে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানও এ ইউনিটে তথ্য পাঠাতে পারবে। বিএফআইইউ এ বিষয়ে সর্বোচ্চ গোপনীয়তা রক্ষা করে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, অলাভজনক প্রতিষ্ঠান বলতে কোম্পানি আইন-১৯৯৪ এর ২৮ ধারা অধীনে সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানকে বুঝাবে।
আর এনজিও বলতে- সোসাইটিজ রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট ১৮৬০, ভলানটারি স্যোশাল ওয়েলফেয়ার এজেন্সিজ (রেজিস্ট্রেশন অ্যান্ড কনট্রোল) অর্ডিনেন্স-১৯৬১, ফরেন ডোনেশন (ভলানটারি অ্যাক্টিভিটিজ) রেগুলেশন অর্ডিনেন্স ১৯৭৮, ফরেন কন্ট্রিবিউশন রেগুলেশন অর্ডিনেন্স ১৯৮২ এবং মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি আইন-২০০৬ এর অনুমদিত বা নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান যারা স্থানীয় উৎস থেকে তহবিল (ঋণ, অনুদান, আমানত) গ্রহণ করে বা অন্যকে প্রদান করে এবং যে কোন ধরনের বৈদেশিক সাহায্য বা ঋণ বা অনুদান গ্রহণ করে তাদেরকে বুঝাবে। এর আগে ব্যাংক, ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বীমা কোম্পানি, মানি চেঞ্জার, রেমিটেন্স আদান-প্রদানকারি প্রতিষ্ঠান, পুঁজিবাজারে মধ্যস্থতাকারি প্রতিষ্ঠানকে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ আইনের রিপোর্টিং এজেন্সী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
সূত্র: দৈনিক মানবজমিন, ২৫ নভেম্বর ২০১৩

,

0 comments

আপনার মন্তব্য লিখুন