সহসাই স্বার্থ সুরক্ষা হচ্ছে না ফোন গ্রাহকদের


বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এখনো গ্রাহক স্বার্থ সুরক্ষা নীতিমালা চূড়ান্ত করতে পারেনি। মোবাইল ফোন অপারেটরদের স্বার্থের কারণেই আটকে আছে কোটি কোটি গ্রাহকের স্বার্থ সুরক্ষার বিষয়টি।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, সময়-অসময়ে বিভিন্ন কোম্পানির বিজ্ঞাপন বা প্রমোশনাল এসএমএস, কল ড্রপ, ব্যালান্স থেকে অতিরিক্ত টাকা কেটে নেয়াসহ নানাবিধ বিড়ম্বনা রোধে বিটিআরসি গ্রাহক স্বার্থ সুরক্ষা নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ নিলেও তা প্রায় ভেস্তে গেছে। মোবাইল ফোন গ্রাহকদের অভিযোগ, ব্যাংকিং, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিত্যব্যবহার্য পণ্য এবং ভ্রমণসহ বিভিন্ন প্যাকেজের অফার দিয়ে সময়-অসময়ে প্রচুর এসএমএস পাঠায় মোবাইল ফোন অপারেটররা, যা কোনোভাবেই রোধ করা যাচ্ছে না। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপক মাত্রায় বেড়েছে মোবাইল ফোনের কলড্রপ (কথা বলার সময় সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া)। আর নেটওয়ার্ক সমস্যা এতটাই তীব্র হয়েছে যে, প্রায় সময়ই মোবাইল ফোনের স্ক্রিনে নেটওয়ার্ক এররও দেখায়। দফায় দফায় চেষ্টা করেও মেলে না সংযোগ। এছাড়া নিয়ম বহির্ভূতভাবে প্রায়ই ব্যালান্স থেকে টাকা কেটে নেয়ার ঘটনা তো রয়েছেই। এ প্রসঙ্গে বিটিআরসির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, গ্রাহক স্বার্থ রক্ষায় গত বছরের সেপ্টেম্বরে মোবাইল ফোন অপারেটরদের প্রতি ১৪টি নির্দেশনা জারির উদ্যোগ নিয়ে গ্রাহকদের মতামত আহ্বান করে বিটিআরসি। পরে গত ৩০ জানুয়ারি গ্রাহক স্বার্থ সুরক্ষা নীতিমালার খসড়া প্রকাশ করা হয়। তখন প্রকাশিত খসড়া নীতিমালার কিছু কিছু বিষয়ে আপত্তি তোলে অপারেটররা।
তিনি আরো জানান, গ্রাহক স্বার্থ সুরক্ষার খসড়া নীতিমালায় যেসব বিষয় রয়েছে তা হলো_ নিরবচ্ছিন্ন সেবা নিশ্চিত, গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা করা এবং গ্রাহকের অনুমতি ছাড়া তথ্য প্রকাশ না করা, প্রমোশনাল এসএমএস বা টেলিমার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে বেশকিছু পদক্ষেপ উল্লেখযোগ্য। এসব কার্যকর হলেই কেবল গ্রাহক স্বার্থ নিশ্চিত করা সম্ভব। সংশ্লিষ্টদের মতে, গ্রাহকদের স্বার্থ সুরক্ষার দায়িত্ব বিটিআরসির। অথচ খোদ বিটিআরসিই এ বিষয়ে কোনো জোরালো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। আর এই সুযোগে দুর্বল সার্ভিস দিয়ে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে মোবাইাল কোম্পানিগুলো। তাদের মতে, পৃথিবির বিভিন্ন দেশেই এসএমএসের মাধ্যমে পণ্য বা সেবার প্রচারণার প্রচলন রয়েছে। তবে এজন্য একটি নিয়মতান্ত্রিক পথও রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে মোবাইল ফোন অপারেটরদের কিছু অসাধু কর্মকর্তা গ্রাহকদের সব তথ্য দিয়ে দিচ্ছে ওইসব প্রতিষ্ঠানকে। আর এই তালিকা পেয়ে তারা তাদের পণ্য অনুযায়ী গ্রাহক পছন্দ করে দেদার এসএমএস পাঠাচ্ছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি। এক্ষেত্রে নীতিমালা থাকলে গ্রাহকদের ভোগান্তি অনেকাংশে কমে আসত। যদিও অপারেটরগুলো বলছে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ছাড়া অন্য কারো কাছে তারা গ্রাহকদের তথ্য ফাঁস করে না।
সূত্র: দৈনিক যায় যায় দিন, ১৯ নভেম্বর ২০১৩

0 comments

আপনার মন্তব্য লিখুন