সরকারের ঋণ ৯০ হাজার কোটি টাকা

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে বর্তমান মহাজোট সরকারের ঋণের পরিমাণ প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা। সরকার ক্ষমতায় আসার পর এ পর্যন্ত ঋণ নিয়েছে দুই লাখ ৩২ হাজার কোটি টাকারও বেশি। দুদিন বিরতির পর গতকাল রবিবার বিকালে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের অধিবেশন শুরু হলে টেবিলে উপস্থাপন করা প্রশ্নোত্তর পর্বে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সংসদকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

বেগম রেহানা আক্তার রানুর প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, গত প্রায় পাঁচ বছরে সরকার বিভিন্ন তফসিল ব্যাংক, আথির্ক প্রতিষ্ঠান ও বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ট্রেজারি বিল ও বন্ডের মাধ্যমে দুই লাখ ৩২ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। এর মধ্যে এক লাখ ৪৪ হাজার ৭৯৮ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। বতর্মানে সরকারের ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৮৭ হাজার ৮৩২ কোটি টাকা।

পিনু খানের লিখিত প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, গত চারটি অর্থ বছরে দেশের স্থল বন্দরগুলো থেকে আমদানি পর্যায়ে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১২ হাজার ৮৬৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। নুরুন্নবী চৌধুরীর লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, চলতি অর্থ বছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) আয়কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১২ হাজার ৩০১ কোটি টাকা। এ পর্যন্ত আদায় হয়েছে ১২ হাজার ৮৯৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা।

বেগম সানজিদা খানমের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বতর্মানে বিশ্বব্যাংকের ঋণ সহায়তায় ২৯টি প্রকল্প চালু রয়েছে। এসকল প্রকল্পে বরাদ্দ হচ্ছে চার হাজার ৮১৩ মিলিয়ন মাকির্ন ডলার বা ৩৮ হাজার ২২ কোটি সাত লাখ টাকা। এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে এক হাজার ২২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা নয় হাজার ৬৭৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এছাড়া বিশ্বব্যাংক পরিচালিত ট্রাস্টি ফান্ডভুক্ত ২৫টি প্রকল্প চালু রয়েছে। এ সকল প্রকল্পে মোট বরাদ্দ ৪৯৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা তিন হাজার ৯১০ কোটি পাঁচ লাখ টাকা। এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৯৭ দশমিক ৩৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৭৬৯ কোটি টাকা। মুহিবুর রহমান মানিকের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, আরাফাত রহমান কোকো কর্তৃক সিঙ্গাপুরে পাচারকৃত ২১ কোটি ৫৫ হাজার ৩৯৪ টাকা দেশে ফেরত আনা হয়েছে।

এবিএম আশরাফ উদ্দিন নিজানের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী অনিয়ন্ত্রিতভাবে জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে সোনালী ব্যাংক লিমিটেড শেরাটন শাখা থেকে মেসার্স হলমার্ক গ্রুপসহ ছয়টি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান ফান্ডেড-ননফান্ডেড তিন হাজার ৫৪৭ কোটি টাকা আত্মসাত্ করেছে। এছাড়া বিসমিল্লাহ গ্রুপ পাঁচটি সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের শাখা থেকে প্রায় এক হাজার ২৫০ কোটি টাকা (ফান্ডেড-ননফান্ডেড) আত্মসাত্ করে।

এ বিষয়ে মন্ত্রী আরো জানান, হলমার্ক জালিয়াতির ঘটনায় আত্মসাত্কৃত অর্থের মধ্যে গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত হলমার্ক গ্রুপসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৪৯২ কোটি ১১ লাখ টাকা আদায় করা হয়েছে। অবশিষ্ট অর্থ আদায়ের জন্য ব্যাংকের আইনজীবীর মতামতের ভিত্তিতে হলমার্ক মালিকানাধীন সম্পত্তি জামানত আবৃত/সংযুক্ত করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ছয় হাজার ১১৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ জমিসহ দালান/?পুরকর্ম ও যন্ত্রপাতিসহ মোট বন্ধককৃত সম্পত্তির মূল্য ৩৮৯ কোটি ৬১ লাখ টাকা। হলমার্ক গ্রুপ কর্তৃক আরো ৭৫৬ কোটি ৬১ লাখ টাকার সাত হাজার ছয় দশমিক ৮১ শতাংশ সম্পত্তি বন্ধক প্রদানের জন্য আবেদন করা হয়েছে। বিষয়টি বতর্মানে প্রক্রিয়াধীন।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, ১১ নভেম্বর ২০১৩

,

0 comments

আপনার মন্তব্য লিখুন