বিসমিল্লাহ গ্রুপের বিরুদ্ধে অর্থ জালিয়াতির মামলা হচ্ছে

বিসমিল্লাহ গ্রুপের বিরুদ্ধে অর্থ জালিয়াতির মামলা হচ্ছেমানি লন্ডারিং করে পাঁচ ব্যাংক থেকে প্রায় ১২শ' কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বিসমিল্লাহ গ্রুপের বিরুদ্ধে ১২টি মামলার সুপারিশ করে ১২টি প্রতিবেদন পেশ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি বিশেষ টিম। গতকাল বৃহস্পতিবার দুদকের বিশেষ অনুসন্ধান ও তদন্ত বিভাগের শাখায় প্রতিবেদনটি পেশ করা হয়। কমিশনের অনুমোদনক্রমে আগামী রবি অথবা সোমবার সংশ্লিষ্ট থানায় আলাদাভাবে মামলাগুলো দায়ের করা হবে।
সূত্র জানায়, নিয়ম অনুযায়ী শাখা প্রধান গতকালই প্রতিবেদনগুলো রেজিস্ট্রারে এন্ট্রি করে সংশ্লিষ্ট ডেস্ক অফিসার উপ-পরিচালক মো. ফনাফিল্যার কাছে হস্তান্তর করেন। এ কর্মকর্তা প্রতিবেদনের আলোকে তৈরি নোট ও প্রতিবেদনটি গতকালই মহাপরিচালক (বিশেষ অনুসন্ধান ও তদন্ত) মো. জিয়াউদ্দিনের কাছে পেশ করেন। মহাপরিচালক প্রতিবেদনগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আগামী রোববার কমিশনার (অনুসন্ধান) নাসির উদ্দিন আহমেদের কাছে পেশ করবেন। এ কমিশনার কর্তৃক প্রতিবেদনগুলো যাচাই করা হবে। পরে চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামানের সভাপতিত্বে তিন সদস্যের কমিশনের বৈঠকে প্রতিবেদগুলো অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সংশ্লিষ্ট অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
জানা গেছে, ওই ১২ মামলার সুপারিশে বিসমিল্লাহ গ্রুপ ও পঁ?াচ ব্যাংকের ৩৮-৪০ জনকে আসামি করা হচ্ছে। এর মধ্যে কোনো কোনো কর্মকর্তাকে একাধিক মামলায় অভিযুক্ত করা হবে।দুদক জানায়, যে প্রক্রিয়ায় হলমার্ক ইনল্যান্ড পারচেজ বিল (আইবিপি) ক্রয়ের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংক থেকে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছিল বিসমিল্লাহ গ্রুপ রফতানির নামে একই প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্রায়ত্ত জনতাসহ পাঁচটি ব্যাংক থেকে প্রায় ১২শ' কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। দীর্ঘ অনুসন্ধানে জালিয়াতি, প্রতারণা ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিসমিল্লাহ গ্রুপ কর্তৃক অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ মিলেছে।অনুসন্ধান সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পরস্পর যোগসাজশে রফতানির নামে ব্যাক টু ব্যাক এলসি ও ফরেন ডকুমেন্টারি বিল ক্রয়ের (এফডিবিপি) দায় বাবদ পাঁচ ব্যাংক থেকে ১ হাজার ১৭৬ কোটি টাকা লোপাট করা হয়। এর মধ্যে ফান্ডেড ৯৩২ কোটি ও নন-ফান্ডেড ২৪৪ কোটি টাকা। পাঁচটি ব্যাংক হলো_ জনতা, প্রাইম, শাহজালাল, যমুনা ও প্রিমিয়ার ব্যাংক।
দুদক চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান সমকালকে বলেন, ব্যাংকের অর্থ লোপাট করে বিদেশ চলে গেছেন। হলমার্ক যে প্রক্রিয়ায় জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাৎ করেছে বিসমিল্লাহ গ্রুপ একই প্রক্রিয়ায় জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাৎ করেছে। এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, মামলা দায়েরের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। ঈদের পর অফিস খোলার পরপরই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। চেয়ারম্যান আরও বলেন, 'দুর্নীতিতে খাজা সোলায়মান হলমার্ক গ্রুপের তানভীর মাহমুদের চেয়ে কোনো অংশে কম নন। তানভীর তো অর্থ লোপাট করে দেশেই ছিলেন। তাকে ধরা গেছে। খাজা সোলায়মান অর্থ আত্মসাৎ করে বিদেশে চলে গেছেন। লোপাট করা অর্থ বিদেশে নিয়ে গেছেন।
জানা গেছে, বিসমিল্লাহ গ্রুপের এমডি খাজা সোলায়মান আনোয়ার চৌধুরী বর্তমানে দুবাইয়ে নিজস্ব মালিকানায় হোটেল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। গ্রুপের মালিকানার সঙ্গে যুক্ত সোলায়মানের ঘনিষ্ঠরাও বিদেশে চলে গেছেন। খাজা সোলায়মান আনোয়ার চৌধুরীসহ গ্রুপের শীর্ষস্থানীয় ৭ কর্মকর্তাকে ১২ মামলায় আসামি করা হচ্ছে। অর্থ আত্মসাতে যোগসাজশ থাকার অভিযোগে পাঁচ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তারাও রয়েছেন আসামির তালিকায়।
সূত্র: দৈনিক সমকাল

0 comments

আপনার মন্তব্য লিখুন