আজ শেষ হবে বাণিজ্য মেলা

আজ শেষ হচ্ছে মাসব্যাপী ১৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। বিকাল ৪টায় সমাপনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মিলনমেলা সমাপ্ত হবে। এবারের মেলা ১০ দিন পিছিয়ে শুরু হলেও মাসব্যাপী মেলা আয়োজকদের জন্য ছিলো বড় চ্যালেঞ্জ। তবে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের উপস্থিতি সব শঙ্কা দূর করে দিয়েছে। সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন মেলা কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ীরা। মেলার সদস্য সচিব বিকর্ণ কুমার ঘোষ জানান, এ বছর মেলা নিয়ে আমরা খুবই সন্তুষ্ট। ক্রেতা ও দর্শনার্থীর সংখ্যা ৩০ লাখেরও বেশি ছাড়িয়ে গেছে। ব্যবসায়ীরাও আশানুরূপ ভালো বিক্রি করেছেন। এ বছর মেলায় কোন বড় ধরনের ঘটনা ঘটেনি।

এ বছর মেলা নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা ছিলো বলে দাবি করেছেন মেলা কর্তৃপক্ষ। শেষ সময়ে নিরাপত্তা কর্মীও বাড়ানো হয়েছে। মেলা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত শুক্রবার এবং শনিবারের কথা বিবেচনায় নিয়ে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কারণ কর্তৃপক্ষ চাইছে না, শেষ সময়ে এসে কোনো ধরনের অঘটন ঘটুক। বাণিজ্য মেলায় দায়িত্বরত একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, মেলা প্রাঙ্গণে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কাউকে সন্দেহ হলেই সাথে সাথে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। মেলার নিরাপত্তা নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন মেলার গেটের ইজারাদার মীর শহিদুল ইসলাম। তিনি জানান, এ বছর মেলা মোটামুটি ভালোই হয়েছে। এ বছর মেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুব ভালো ছিলো। ফলে আমরা সুষুমভাবে কাজ করতে পেরেছি। গত বছরের চেয়ে টিকিটের দাম বেড়ে যাওয়ায় এ বিষয়টি বার বার ফেইস করতে হয়েছে।

শেষ সময়ে বেচা-বিক্রিতে অসম প্রতিযোগিতায় নেমেছেন বিক্রেতারা। চলছে শেষ সময়ের বেচাকেনা। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দিচ্ছে বিভিন্ন ধরনের ছাড়। ব্যবসায়ীরা জানান, বাণিজ্য মেলা হচ্ছে নিত্যনতুন পণ্য প্রদর্শনী ও বিক্রির সুস্থ প্রতিযোগিতার জায়গা। এখানে বিক্রেতারা নিজেদের সেরা পণ্যটাই বিক্রির চেষ্টা করছেন। পরবর্তী সময় যেসব পণ্য বাজারে আসবে সেগুলোও আমরা মেলায় বিক্রি বা প্রদর্শন করেছি।

দেশি ব্র্যান্ডের শার্ট মেলায় পাওয়া যাচ্ছে ৬০০ থেকে ১ হাজার টাকার মধ্যে। ফার্নিচার প্যাভেলিয়নগুলোতে মেলায় নিয়মিত দামের চেয়ে ১০ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেয়া হচ্ছে। শেষ সময়ে উপচেপড়া ভিড় প্লাস্টিক পণ্যের প্যাভেলিয়নগুলোতে। মেলায় ৩০০ টাকার বেশি পণ্য ক্রয় করলে ফ্রি দেয়া হচ্ছে একটি প্রাণের মিস্টার নুডলস।

চামড়া, সিনথেটিক, উল আর পাটের তৈরি বাহারি কার্পেটে এরই মধ্যে আকৃষ্ট হয়েছেন ক্রেতারা। প্যাভেলিয়নে চামড়ার ৫ ফুট বাই ৭ ফুট আকারের কার্পেট পাওয়া যাচ্ছে ৯ হাজার ৫০০ টাকায়। সিনথেটিকের সাড়ে ৫ বাই ৭ ফুটের কার্পেট পাওয়া যাবে ২২ হাজার টাকায়। মেলার ইলেকট্রোনিক্স পণ্যে পাওয়া যাচ্ছে ৩ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ছাড়।

মেলায় ডজন খানেক স্টলে বিভিন্ন ধরনের কাশ্মীরি বিছানার চাদর, কুশন ও শাল নিয়ে আসা হয়েছে। তরুণীদের জন্য বাহারি ব্যাগ আছে প্রায় ১০ ধরনের। ২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৭ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে পাঁচ সেটের কাশ্মীরি বেডশিট। টেবিল ম্যাট পাওয়া যাচ্ছে ১ হাজার টাকা থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে। বালিশ বা সোফার কুশন পাওয়া যাচ্ছে ১০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকায়। কাশ্মীরি নকশায় মেয়েদের হ্যান্ডব্যাগ পাওয়া যাচ্ছে ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকায়।

ধানমন্ডি থেকে সপরিবারে মেলায় এসে গৃহস্থালী পণ্য ক্রয় করে নিলেন ব্যবসায়ী কামাল আহম্মেদ। তিনি জানান, গত বছর ডিসেম্বর মাসে নতুন ফ্লাটে উঠেছি কিন্তু কোন গৃহস্থালী পণ্য ক্রয় করিনি। বাণিজ্য মেলার অপেক্ষায় ছিলাম। মেলার শেষ সময় এসে মূল্যছাড় পেয়ে পছন্দের পণ্য কিনে নিলাম। সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০১৪

0 comments

আপনার মন্তব্য লিখুন