অতিরিক্ত সব অংশই অলস অর্থ নয়

ব্যাংকিং খাতে এসএলআর ও সিআরআর সংরক্ষণের পর অতিরিক্ত তারল্যের সমস্ত অংশই অলস অর্থ নয় বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সমপ্রতি গণমাধ্যমে অলস টাকা প্রকাশিত সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল এ সংক্রান্ত ব্যাখ্যা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অফ-সাইট সুপারভিশন বিভাগ। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, বাংলাদেশে কার্যরত প্রতিটি ব্যাংক কোম্পানিকে বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার, ১৯৭৫ এবং ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ অনুসারে নির্ধারিতহারে সিআরআর এবং এসএলআর সংরক্ষণ করতে হয়। তলবি এবং মেয়াদি দায়ের মোট পরিমাণের ন্যূনতম সাড়ে ৫% প্রতিদিন এবং ৬% হারে দ্বিসপ্তাহভিত্তিতে সিআরআর সংরক্ষণ করতে হয়। সিআরআর সংরক্ষণের এ হার সব ব্যাংকের জন্য সমান। অন্যদিকে, তলবি ও মেয়াদি দায়ের মোট ১৯%  (ফেব্রুয়ারি থেকে ১৩%) প্রতিদিন সংরক্ষণ করতে হয়। এসএলআর হিসেবে সংরক্ষণযোগ্য সম্পদ হচ্ছে হাতে নগদ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এজেন্ট হিসেবে সোনালী ব্যাংকের রক্ষিত স্থিতি, নগদ জমা  (ফেব্রুয়ারি থেকে ৬ শতাংশের অতিরিক্ত), দায়মুক্ত সরকারি সিকিউরিটিজ এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে রক্ষিত বৈদেশিক মুদ্রা ক্লিয়ারিং হিসাবের প্রাক্কলন স্থিতি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গত ৯ই জানুয়ারির হিসাব অনুযায়ী, ব্যাংকিং খাতে এসএলআর সংরক্ষণের পর অতিরিক্ত তারল্য ৮৯ হাজার ৩৩৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এ অতিরিক্ত তারল্যের মধ্যে সরকারি সিকিউরিটিজে রয়েছে ৭৯ হাজার ৯৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকা (অতিরিক্ত তারল্যের ৮৮.৫%), সাড়ে ৫% হারে দৈনিক সিআরআর সংরক্ষণের পর অতিরিক্ত ৫ হাজার ১৫১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা (অতিরিক্ত তারল্যের ৫.৮%) এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে রক্ষিত বৈদেশিক মুদ্রা ক্লিয়ারিং হিসাবের প্রাক্কলন স্থিতি ৫ হাজার ৯০ কোটি ২২ লাখ টাকা (অতিরিক্ত তারল্যের ৫.৭%)। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরও জানায়, ব্যাংকিং খাতের এ অতিরিক্ত তারল্যের সমস্ত অংশই ‘অলস অর্থ’ নয়। কেননা, সরকারি সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ শুধুমাত্র সরকারের উন্নয়ন ও অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য অপরিহার্য নয় বরং এ বিনিয়োগ ব্যাংকের জন্য ঝুঁকিমুক্ত আয়ও নিশ্চিত করে। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে রক্ষিত বৈদেশিক মুদ্রা ক্লিয়ারিং হিসাবের প্রাক্কলন স্থিতির উপর ব্যাংকগুলো সুদ পেয়ে থাকে এবং বৈদেশিক ব্যবসা-বাণিজ্যর একটি বড় অংশের দায় মেটানোর কাজে ব্যবহার করে থাকে। সিআরআর সংরক্ষণের পর অতিরিক্ত তহবিলের উপর ব্যাংক কোন সুদ পায় না।
 সে কারণে সিআরআর সংরক্ষণের পর অতিরিক্ত তহবিলই অলস তহবিল হিসেবে বিবেচ্য হবে। তবে ব্যাংকগুলো সিআরআর সংরক্ষণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রক্ষিত চলতি হিসাব ব্যবহার করে বিধায় এ হিসাবে কিছুটা অতিরিক্ত তহবিল থাকা অস্বাভাবিক নয়। সুতরাং সরকারি সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ বাদে রক্ষিত অতিরিক্ত রিজার্ভের পরিমাণ ৫ হাজার ১৫১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা, যা আমানতের মাত্র ০.৮৫%। এটি মোটেই অতিরিক্ত নয় বলে দাবি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সূত্র: দৈনিক মানবজমিন, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০১৪

,

0 comments

আপনার মন্তব্য লিখুন