ব্যাংকিং খাতকে পেছনে ফেলে বস্ত্র খাত শীর্ষে

পুঁজিবাজারে সদ্য সমাপ্ত বছরের লেনদেনে প্রাধান্য ধরে রাখতে পারেনি ব্যাংকিং খাত। ব্যাংকিং খাতকে পেছনে ফেলে এবার শীর্ষে উঠে এসেছে বস্ত্র খাত। কয়েক বছর ধরে চলে আসা শীর্ষস্থান হাতছাড়া হয়েছে ব্যাংকিং খাতের। এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, ব্যাংকগুলোর মূলধন বেশি। বিগত বছরে ব্যাংক লেনদেনে শীর্ষস্থান দখল করতো, এটি ছিল স্বাভাবিক। গত কয়েক বছরে মুনাফা ভালো ছিল। কিন্তু পুঁজিবাজারের সংকট শুরু হলে ব্যাংকের ওপর প্রভাব পড়ে। শুধু শেয়ারবাজারেই নয়, অন্য বিনিয়োগেও আঘাত লেগেছে। এছাড়া গত দুই বছর ধরে চলে আসা রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব পড়েছে। ফলে মুনাফায় আঘাত লেগেছে। এতে ব্যাংকিং খাত শীর্ষস্থান হাতছাড়া হয়েছে। এতে বস্ত্র খাত লেনদেনে শীর্ষে উঠে এসেছে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষক শেখ মাশরিক হাসান বলেন, ব্যাংকে ব্যাপক অলস টাকা পড়েছিল, বিনিয়োগে আসেনি। ফলে ব্যাংকের ব্যবসা খারাপ গেছে। অন্যদিকে গত বছর বেশকিছু বস্ত্র খাতের নতুন কোম্পানি এসেছে। এতে এ খাতের শেয়ার লেনদেন বেড়ে শীর্ষে চলে এসেছে।

ডিএসই সূত্র জানায়, সদ্য সমাপ্ত ২০১৩ সালে বস্ত্র খাতের মোট ১৫ হাজার ২০৮ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের মোট লেনদেনের ১৫.৯৬ শতাংশ।

বস্ত্র খাতের পর বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক ছিল জ্বালানি খাতের শেয়ারের প্রতি। গত বছর জ্বালানি খাতের মোট ১৪ হাজার ১৪৩ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৪.৮৫ শতাংশ। ২০১২ সালে জ্বালানি খাতের মোট লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১৪ হাজার হাজার ৬৪০ কোটি টাকা। এরপর ওষুধ খাত। এ খাতের মোট ৯ হাজার ৬৫৪ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ১০.১৪ শতাংশ।

ইঞ্জিনিয়ারিং খাতের মোট ৮ হাজার ২৫৫ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা মোট লেনদেনের ৮.৬৭ শতাংশ। ব্যাংকের মোট ৭ হাজার ৯৪৭ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা মোট লেনদেনের ৮.৩৪ শতাংশ। এরপর ছিল টেলিকম খাত। এ খাতের মোট ৫ হাজার ৭৪০ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা মোট লেনদেনের ৬.০৬ শতাংশ। ভ্রমণ অবকাশ খাতের মোট ৫ হাজার ৩১৭ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা মোট লেনদেনের ৫.৫৮ শতাংশ। বীমা খাতের মোট ৫ হাজার ১৪২ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা মোট লেনদেনের ৫.৪০ শতাংশ।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মোট ৪ হাজার ৭১৯ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা মোট লেনদেনের ৪.৯৫ শতাংশ। এরপর খাদ্য খাতের ৪ হাজার ১৮২ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা মোট লেনদেনের ৪.৩৯ শতাংশ। মিউচুয়াল ফান্ডের মোট ৩ হাজার ৯৯৩ ইউনিটের লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের ৪.১৯ শতাংশ।
সূত্র: দৈনিক ভোরের কাগজ, ৭ জানুয়ারী ২০১৪

,

0 comments

আপনার মন্তব্য লিখুন