প্রেমে ব্যর্থ হলে হতাশায় ভেঙে পড়ে মাছিরা

'ডেড সেক্সি' বলতে আমরা কী বুঝি? পাকা ফলের উপর ভনভন করা ছোট্ট ছোট্ট মাছিদের (ড্রসফিলা) ক্ষেত্রে কিন্তু এই কথাটার মানে মারাত্মক। আক্ষরিক অর্থেই কোনও কোনও সময় সেক্স মাছিদের জন্য মৃত্যু ডেকে আনে।

সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, মিলনে ইচ্ছুক পুরুষ মাছি যদি মিলনের সুযোগ না পায় তাহলে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। তাদের খাবার ইচ্ছা চলে যায়। দ্রুত মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যায় তারা।

মানুষের সঙ্গে ড্রসফিলা মেলানোগ্যাস্টারের স্নায়ুগত মিল রয়েছে। শেখা, স্মৃতি, সারকাডিয়ান রিদম, মৃগী, এমন কী নেশা হয়ে যাওয়ার ব্যাপারেও মানুষের মত আচরণ করে তারা।

গত বছর সানফ্রান্সিকোর একদল গবেষক রীতিমত পরীক্ষা করে দেখেছেন ড্রসফিলারা এমনিতে স্বভাবে বেশ রসিক। মানুষের সঙ্গে তাদের বেশ মিল। প্রেমে ব্যর্থ মাছিদের সঙ্গে মদের পরিচয় ঘটালে তারা দ্রুত মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। নেশাতুর ড্রসফিলার মস্তিষ্ক থেকে নিউরোপেপটাইড এফ নামের এক ধরনের রাসয়ানিক পদার্থ ক্ষরিত হয়।

পরীক্ষাগারে এক দল পুরুষ ড্রসফিলার কিছু ফিজিওলজিক পরিবর্তন করে তাদের ওপর স্ত্রী সেক্স হরমোন ছিটিয়ে দিয়েছিলেন গবেষকরা। এই মাছিরা নকল স্ত্রী মাছির ভূমিকা পালন করেছিলেন। এই বার কিছু পুরুষ মাছিকে এই সব নকল স্ত্রী মাছির সামনে ছেড়ে দিলে পুরুষ মাছিরা ফেরোমনের গন্ধে আকৃষ্ট হয়ে তাদের দিকে রীতিমত প্রেম করতে এগিয়ে আসে। একটি পুরুষ মাছি পাঁচটি নকল স্ত্রী মাছির সঙ্গে চুটিয়ে প্রেম করে যতবার মিলিত হওয়ার চেষ্টা করে ততবারই ব্যর্থ হয়। সাধারণ অবস্থায় পাঁচটি স্ত্রী মাছির সঙ্গে মিলনের পর ক্ষুধার্ত হয়ে পড়ে। মিলনোন্মুখ পুরুষ মাছিরা ব্যার্থ হওয়ার পর এতটাই হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে যে তাদের সামনে খাবার ধরলেও তারা সে দিকে ফিরেও তাকায় না।

মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক প্লেচার জানিয়েছেন এই পরীক্ষা প্রমাণিত করে যৌনমিলন ফলের মাছিদের পক্ষে খুবই উপকারী। তবে ব্যর্থ হলে প্রাণঘাতি।
সূত্র: দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন, ০৯ ডিসেম্বর ২০১৩

0 comments

আপনার মন্তব্য লিখুন