আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে পারে বাংলাদেশ

আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে পারে বাংলাদেশ। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উচিত বাংলাদেশের বিচার বিভাগের স্বায়ত্তশাসন পুনঃস্থাপিত করা। মানবাধিকার কর্মীদের বিরুদ্ধে বিচার বন্ধ করা। আগামী বছর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তরের একটি গ্রহণযোগ্য ব্যবস্থা নিতে উচিত রাজনৈতিক বিরোধীদের  সঙ্গে কাজ করা। গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক সম্পাদকীয়তে এসব কথা বলা হয়েছে। ‘পলিটিক্যাল ক্রাইসিস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক ওই সম্পাদকীয়তে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক সঙ্কটের জন্য সরাসরি দায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে পর্যন্ত দৃশ্যত তিনি ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে এবং একই সময়ে প্রয়োজনীয় যে কোন উপায়ে বিরোধীদের দমিয়ে রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বছরের শুরুতে শুরু হওয়া ধারাবাহিক হরতালে বাংলাদেশ অচল হয়ে পড়েছে। বিবদমান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সহিংস সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন কয়েক শ’ মানুষ। বিরোধী দলীয় শীর্ষ নেতাদের ও মানবাধিকার কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আদালত দোষী সাব্যস্ত করে রায় দিয়েছেন। ২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবিধান থেকে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ক বিধান বাতিল করেন। ওই বিধান অনুযায়ী, ক্ষমতাসীন দলকে জাতীয় নির্বাচনের তিন মাস আগে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হয় নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে। কিন্তু তার পরিবর্তে শেখ হাসিনা গঠন করেছেন একটি ‘সর্বদলীয় সরকার’। এর প্রধান তিনিই। এটা সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির প্রধান। এ দু’নেত্রী ভয়াবহ বিস্ফোরণোন্মুখ পরিস্থিতির মধ্যে আবদ্ধ হয়ে পড়েছেন। ইতিমধ্যে বিএনপির মিত্র জামায়াতে ইসলামীকে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেন এমন অনেক বাংলাদেশী আশঙ্কা করছেন, পাকিস্তানের কাছ থেকে ১৯৭১ সালে স্বাধীন হওয়া এ দেশটির ভিত্তির জন্য হুমকি ইসলামী দলগুলো। কিন্তু নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করায় তাদের সমর্থকরা ক্ষুব্ধ হয়ে রাজপথ বেছে নেবে।
 সূত্র: দৈনিক মানবজমিন, ২১ নভেম্বর ২০১৩

0 comments

আপনার মন্তব্য লিখুন