পাঁচ বছরে ৫ হাজার কোটি টাকার সুদ মওকুফ

ব্যাংকগুলো পাঁচ বছরে হাজার ৮৩৫ কোটি লাখ টাকার সুদ মওকুফ করেছে এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো মওকুফ করেছে হাজার ৬৪৪ কোটি ৮০ লাখ ৩৭ হাজার টাকা বাকি টাকা অন্য ব্যাংকের একই সময়ে প্রায় ১১ হাজার কোটি অবলোপন করেছে

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০০৯ সাল থেকে ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত হাজার ৮৩৫ কোটি লাখ টাকার সুদ মওকুফ করা হয়েছে। ২০০৯ সালে বর্তমান সরকার দায়িত্বে আসার আগে পূর্বের সরকার মওকুফ করেছিল হাজার ৬৪৫ কোটি টাকা।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত সাড়ে চার বছরে মওকুফ করা টাকার মধ্যে জনতা ব্যাংক হাজার ৯০৬ কোটি ৫৫ লাখ, অগ্রণী ব্যাংক ৫৬৫ কোটি ২০ লাখ রূপালী ব্যাংক ৩৩০ কোটি ৫৮ লাখ টাকার সুদ মওকুফ করেছে। এছাড়া কৃষি ব্যাংক ৫৩ কোটি ২৫ লাখ, সোনালী ব্যাংক হাজার ৭৬১ কোটি ২৩ লাখ, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) ১৯ কোটি ৬৪ লাখ, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ১৮৩ কোটি ৮৯ লাখ এবং বেসিক ব্যাংক ১৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকার সুদ মওকুফ করেছে।

সূত্র মতে, এর আগে বছরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো যে হাজার ৬৪৪ কোটি ৮০ লাখ ৩৭ হাজার টাকার সুদ মওকুফ করেছিল, এর মধ্যে সোনালী ব্যাংকের ৯৮৭ কোটি ৯২ লাখ ৫৭ হাজার, জনতা ব্যাংকের ৬৫৫ কোটি ৭৮ লাখ ৬৮ হাজার, অগ্রণী ব্যাংকের ৯৪৬ কোটি ৬০ লাখ এবং রূপালী ব্যাংকের ১৮৩ কোটি ২৭ লাখ ২৯ হাজার টাকা সুদ রয়েছে। এছাড়া কৃষি ব্যাংকের ২৫৯ কোটি ৪২ লাখ ৭৯ হাজার টাকা, শিল্প ব্যাংকের ৩২৫ কোটি ৪৫ লাখ হাজার টাকা, রাকাবের ১৮ কোটি ৪৮ লাখ ২৬ হাজার টাকা, বিডিবিএল (সাবেক শিল্পঋণ সংস্থার) ২৫৬ কোটি লাখ ৪৪ হাজার টাকা এবং বেসিক ব্যাংকের ১১ কোটি ৮০ লাখ ৩১ হাজার টাকার সুদ মওকুফ করা হয়েছিল।
 
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি বছরের জুন শেষে রাষ্ট্রীয় মালিকানার বাণিজ্যিক ব্যাংকে মোট অবলোপন করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বর শেষে এর পরিমাণ ছিল ১০ হাজার ২৪৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে জনতা ব্যাংকে হাজার ৩৪০ কোটি, অগ্রণী ব্যাংকে হাজার ৭১১ কোটি, রূপালী ব্যাংকে হাজার ১৯ কোটি এবং সোনালী ব্যাংকের রয়েছে হাজার ৬৫০ কোটি টাকা। জুন ২০১৩ পর্যন্ত বিশেষায়িত খাতের ব্যাংকগুলোয় মোট হাজার ২৫৯ কোটি টাকার ঋণ অবলোপন করা হয়েছে। ডিসেম্বর শেষে যা ছিল হাজার ২৩৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের ঋণ অবলোপনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে হাজার ৬৯০ কোটি টাকা, যা সর্বোচ্চ।

প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রূপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান . আহমেদ আল কবির গণমাধ্যমকে বলেন, সরকারি ব্যাংকগুলো বেশ কিছু 'বিষয়' মোকাবিলা করে ব্যাংক পরিচালনা করতে হয়। এর মধ্যে কিছু গ্রাহক আছেন, যারা ঋণ ফেরত দিতে চান না। সেক্ষেত্রে ব্যাংক ওই গ্রাহকের বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা করে। জন্য উকিলকে টাকা দিতে হয়। এরপরও অনেক সময় ঋণের টাকা আদায় করা সম্ভব হয় না। বাধ্য হয়ে কোন কোন ঋণ রাইট অফ করেও রাখতে হয়।
সূত্র: দৈনিক সংবাদ, ১২ নভেম্বর ২০১৩

,

0 comments

আপনার মন্তব্য লিখুন