কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কড়াকড়ি চাঙা হচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতি

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কড়াকড়ির কারণে আগের তুলনায় গ্রামে বেশিসংখ্যক শাখা খুলছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। এ ক্ষেত্রে নতুন ব্যাংক আরও এগিয়ে। এ পর্যন্ত কয়েকটি ছাড়া বেশির ভাগ নতুন ব্যাংক গ্রামে শাখা খুলেছে। এখন গ্রামের উদ্যোক্তাদের ঋণও বেশি দিচ্ছে তারা। চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে ব্যাংকগুলো এসএমই খাতে ৪১,৮৪৯ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। এর মধ্যে গ্রামাঞ্চলে দেয়া হয়েছে ১০,১৮৫ কোটি টাকা। এর পরিমাণ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৬ দশমিক ২৩ শতাংশ বেশি। এবিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস বিভাগের মহাব্যবস্থাপক সুকোমল সিংহ চৌধুরী মানবজমিনকে বলেন, বর্তমান গভর্নর আসার পর থেকে শহরের পাশাপাশি গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা করার লক্ষ্যে গ্রামে ঋণ বাড়ানোর ওপর জোর দেয়া হচ্ছে। গ্রামে তাদের ঋণ বাড়ার বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত ব্যাংকগুলোকে নিয়ে বৈঠক করছে। পাশাপাশি গ্রামে ঋণ দিয়ে ব্যাংকগুলোও লাভবান হচ্ছে। এসব কারণে গ্রামে ঋণ বিতরণ আগের তুলনায় বাড়ছে। সামনের দিনে গ্রামে ঋণ আরও বাড়ার বিষয়ে তিনি আশা প্রকাশ করেন। সূত্র জানায়, চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে বিভিন্ন ব্যাংক মোট ৮২টি নতুন শাখা খুলেছে। এর মধ্যে গ্রামাঞ্চলে খোলা হয়েছে ৪৭টি শাখা। আর শহরে খোলা হয়েছে ৩৫টি। সব মিলিয়ে ব্যাংকগুলোর গ্রামীণ শাখার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪,৮২৭টি। এ সময়ে শহরে শাখা দাঁড়িয়েছে ৩,৬০০টি। এর আগে বেসরকারি ব্যাংকগুলো শহরে ৩টি শাখার পরিবর্তে গ্রামে একটি শাখা খুলতো। বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি বছর থেকে শহরে একটি শাখার পরিবর্তে গ্রামে একটি শাখা খোলা বাধ্যতামূলক করেছে। তবে দেখা যাচ্ছে, তারা শহরের তুলনায় গ্রামে বেশি শাখা খুলছে। মূলত শহরের তুলনায় গ্রামের ঋণ গ্রহীতাদের মধ্যে খেলাপি হওয়ার প্রবণতা কম থাকায় তারা গ্রামমুখী হচ্ছে। গ্রামের উদ্যোক্তাদের সময়মতো ঋণ পরিশোধের ধারাবাহিকতা ভাল বলে ব্যাংকাররা জানান।

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে এসএমই খাতে ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের মধ্যে ১০,১৮৪ কোটি টাকা দেয়া হয়েছে গ্রামে, যা মোট ঋণের প্রায় ২৮ শতাংশ। আগের বছরের একই সময়ে গ্রামাঞ্চলে দেয়া হয়েছিল ৭,৪৭৬ কোটি টাকা, যা ছিল এসএমই ঋণের ২৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এতে একই সময়ের তুলনায় বিতরণ বেড়েছে ২,৭০৯ কোটি টাকা, যা ৩৬ দশমিক ২৩ শতাংশ। সামপ্রতিক সময়ে ব্যাংকগুলোতে খেলাপি হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। এক্ষেত্রে গ্রামের তুলনায় শহরের গ্রাহকদের মধ্যে এ প্রবণতা বেশি। এসব কারণে ব্যাংকগুলো নিজেদের মুনাফার কথা চিন্তা করে গ্রামমুখী হচ্ছে বলে জানা গেছে।
সূত্র: দৈনিক মানবজমিন

,

0 comments

আপনার মন্তব্য লিখুন